ব্যাংক বীমা ডেস্ক | রবিবার, ২৪ মার্চ ২০২৪ | প্রিন্ট | 60 বার পঠিত
দীর্ঘদিনের প্রচেষ্টায় দেশে গড়ে ওঠা রাবার চাষ ও শিল্পকে আরও উন্নত ও সমৃদ্ধ করার ওপর জোর দিয়েছেন জনপ্রতিনিধি ও এ খাতের উদ্যোক্তারা। গতকাল শনিবার চিটাগাং ক্লাবে রাবার শিল্পের উন্নয়ন ও সম্ভাবনা শীর্ষক আলোচনা অনুষ্ঠানে উন্নত দেশগুলোর সঙ্গে তাল মিলিয়ে এ শিল্পকে এগিয়ে নেওয়ার ব্যাপারে একমত হন সবাই।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি পার্বত্য চট্টগ্রাম মন্ত্রণালয় সংক্রান্ত সংসদীয় কমিটির সদস্য এমএ মোতালেব এমপি বলেন, প্রধানমন্ত্রী রাবার শিল্পকে উন্নত করতে আন্তরিক উদ্যোগ নিয়েছেন। রাবার শিল্পকে নিয়ে সবাই যাতে লাভবান হন সে বিষয়টিই তিনি চিন্তা করেছেন। এমএ মোতালেব বলেন, রাবার বাগানের ইজারা নবায়ন ফি ৭৫ হাজার টাকা থেকে কীভাবে এক লাফে ৫ লাখ টাকা করা হয়েছে তা নিয়ে সংসদীয় কমিটিতে আলোচনা হয়েছে। এ ধরনের প্রস্তাব পুরোপুরি অপ্রাসঙ্গিক। সংসদীয় কমিটিকে জানানো হয়েছে, এ প্রস্তাব রাবার বোর্ড থেকে দেওয়া হয়েছে। তিনি সংসদীয় কমিটির আগামী বৈঠকে বাংলাদেশ রাবার বোর্ডের চেয়ারম্যানকে উপস্থিত হওয়ার আমন্ত্রণ জানান। এমএ মোতালেব রাবার বাগানে কেবল রাবার গাছ লাগানোর জন্য উদ্যোক্তাদের প্রতি আহ্বান জানান।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে বাংলাদেশ রাবার বোর্ডের চেয়ারম্যান সৈয়দা সারোয়ার জাহান বলেন, জেলা প্রশাসক চেয়েছিলেন নবায়ন ফি ১০ লাখ টাকা করতে। সেখানে আমি রীতিমতো যুদ্ধ করে তা ৫ লাখ টাকায় নামিয়ে আনি। তিনি আরও বলেন, ২০১৯ সালে এ দায়িত্ব নেওয়ার পর আমি রাবার খাতকে উন্নত করতে নানাভাবে চেষ্টা করেছি। রাবার চাষকে শিল্পপণ্যের তালিকা থেকে বাদ দিয়ে কৃষিপণ্যের তালিকায় আনার কাজটি অনেক দূর এগিয়েছি। সরকারের অনেক আমলা বিদ্যমান আইনকে ভয় পান। আমি নিজেও একজন আমলা। তবুও আমি চেষ্টা করে যাচ্ছি। রাবার মালিকদের যাতে কৃষিঋণ দেওয়া যায় সে চেষ্টাও অব্যাহত রয়েছে। প্রধানমন্ত্রী এসব ব্যাপারে শিগগিরই ঘোষণা দেবেন বলে আমরা আশা করছি। তিনি বলেন, রাবার চাষকে উন্নত করতে মালয়েশিয়া ও ভিয়েতনামসহ কয়েকটি দেশ থেকে উন্নত বীজ ও চারা সংগ্রহে আমাদের চেষ্টাও অব্যাহত আছে।
অপর বিশেষ অতিথি পিএইচপি ফ্যামিলির চেয়ারম্যান সূফী মোহাম্মদ মিজানুর রহমান প্রতিটি রাবার বাগানকে বীমার আওতায় আনার ব্যবস্থা করতে রাবার বোর্ডের চেয়ারম্যানকে অনুরোধ করেন। তিনি রাবারকে কৃষিপণ্য হিসেবে ঘোষণা দিয়ে এ খাতে বিনা সুদে ঋণের ব্যবস্থা করারও অনুরোধ করেন। এ দেশে রাবার শিল্পের বিকাশে বিগত চার দশক ধরে প্রচেষ্টার কথা বর্ণনা করে সূফী মোহাম্মদ মিজানুর রহমান বলেন, চট্টগ্রাম থেকে যাত্রা করে বান্দরবানের রাবার বাগান পৌঁছতে একদিনেরও বেশি সময় লেগে গেছে। প্রতিকূল প্রাকৃতিক পরিবেশ ও ভূমিকে আয়ত্তে আনতে আমাদের বছরের পর বছর কষ্ট করতে হয়েছে। খরস্রোতা নদীতে ভাসতে ভাসতে কূল ধরতে হয়েছে। আবার খরার সময় বাগানের পর বাগান মরে গেছে। ভূমিধসে ভেঙে গেছে রাবার বাগান। এ অবস্থায় আজকে সম্ভাবনার একটি জায়গায় দাঁড়িয়ে আছে দেশের এই খাতটি।
রাবার চাষের বিকাশে সাতটি প্রস্তাব দেন বাংলাদেশ রাবার গার্ডেন ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মইনুল হোসেন। এগুলো হলোÑ বিশ্বের অন্য দেশের মতো রাবারকে কৃষিপণ্য ঘোষণা, রাবার বাগানের নবায়ন ফি ছাড়া স্বতঃনবায়নের ব্যবস্থা করা, রাবার আমদানির ওপর ৫০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করা, দেশে উৎপাদিত রাবারের ওপর থেকে সাড়ে ২৭ শতাংশ কর প্রত্যাহার করা, রাবার বোর্ডে মালিক প্রতিনিধি একজনের স্থলে ৭ জনে উন্নীত করা, জলবায়ু পরিবর্তন তহবিল থেকে ঋণের ব্যবস্থা করা এবং রাবার চাষ উন্নত করতে বিদেশ থেকে উচ্চ ফলনশীল রাবার বাড, ক্লোন ও বীজ আমদানি করা।
বিশেষ অতিথি হিসেবে আরও উপস্থিত ছিলেন পিএইচপি ফ্যামিলির পরিচালক মোহাম্মদ আলী হোসেন। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ রাবার গার্ডেন ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মোহাম্মদ কামাল উদ্দিন।
Posted ১:৪৬ অপরাহ্ণ | রবিবার, ২৪ মার্চ ২০২৪
bankbimaarthonity.com | rina sristy